স্ক্যাবিস রোগের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার

স্ক্যাবিস ছোঁয়াচে চর্মরোগ

স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে চর্মরোগ যা তীব্র চুলকানি ও ফুসকুড়ির মাধ্যমে আত্নপ্রকাশ করে থাকে। এটি এক ধরনের পরজীবির আক্রমণের ফল। সাধারণত রাতে চুলকানি বাড়ে। আক্রান্ত হলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্ক্যাবিস সম্পর্কে সমাজে অনেক ধরনের ভুল তথ্য ছড়িয়ে আছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। চলুন জেনে নেই এর লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার।

স্ক্যাবিস কি

স্ক্যাবিস হলো পরজীবি আক্রান্ত চামড়ার রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে চামড়ায় অসহ্য রকমের চুলকানির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে রাতের বেলা এই চুলকানি বেড়ে যায়। যা অত্যাধিক ছোঁয়াচে প্রকৃতির হয়ে থাকে। সহজে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের  একজন আক্রান্ত হলে বাকি সদস্যরা সঠিক সময়ে সতর্ক না হলে সহজেই আক্রান্ত হতে পারে।

কারণ

Sarcoptes scabiei নামক এক আনুবীক্ষণিক কীটের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে।

স্ক্যাবিসের ইতিহাস

স্ক্যাবিসের ইতিহাস ও মানব সভ্যতার মতো পুরাতন। খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ শতকে প্রাচীন মিশর ও চীনের ইতিহাসে স্ক্যাবিস রোগের বিবরণ পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ শতকে আরিস্টটল চামড়ার নিচে জীবিত প্রাণী বলে এই রোগের কথা উল্লেখ করে গেছেন। ২য় শতকে রোমান চিকিৎসক গ্যালেন এই রোগের কথা উল্লেখ করেছেন। মধ্য যুগে এই রোগকে খারাপ আত্মার ভর করা বা অভিশাপ বলা হতো। ১৬৮৭ সালে ইতালিয়ান চিকিৎসক জিওভানি বনোমো ও ডিয়াসিনটো চিস্তনি মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আণুবীক্ষনিক যন্ত্রের মাধ্যমে Sarcoptes scabiei পরজীবিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। ১৯০০ শতকে সালফার ও অন্যান্য মলম আবিষ্কৃত হয় এই রোগের প্রথম দিকের চিকিৎসা হিসেবে। পরে বিংশ শতাব্দিতে পারমেথ্রিন ও আইভারমেকটিন বাজারে আসে এই রোগের উন্নত চিকিৎসা হিসেবে।

পরজীবির পরিচয়

এনিম্যালিয়া রাজ্যের অ্যারাকনিডা বর্গের সারকোপটিডা গোত্রের প্রাণী। যার বৈজ্ঞানিক নাম সারকোপটিস স্ক্যাবি (Sarcoptes scabiei)। এটি দেখতে মাকড়শার মতো। এর আটটি পা থাকে শরীরে। দৈর্ঘ্যে মাত্র ০.২–০.৪ মিলিমিটার হয়ে থাকে। এই পরজীবি স্পর্শের মাধ্যমে নতুন শরীরে আসে। স্ত্রী স্ক্যাবি চামড়ার উপরে অথবা গর্ত করে ভিতরে নালা তৈরি করে ডিম পাড়ে। যখন ডিম পারে দিনে ২ থেকে ৩ টা করে ডিম পারে। সেখানেই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং মানুষের শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্ৰহণ করে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে, বড় হয়। এভাবে একটা পুরো চক্র শেষ হতে ১০ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে।

সারকোপটিস স্ক্যাবি দেখতে মাকড়শার মতো

লক্ষণ প্রকাশ

পরজীবি দ্বারা আক্রান্ত হবার সাথে সাথে লক্ষণ প্রকাশ পায় না। সাধারণত ২ থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগে। কিন্তু এই সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তি বাহক হিসেবে অন্য মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়াতে পারে।

প্রকারভেদ

স্ক্যাবিস সাধারণত ২ প্রকারের হয়ে থাকে। যথা :-

সরল স্ক্যাবিস (Classic Scabies)

এই স্ক্যাবিসটা সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে। ছোঁয়াচে হলেও বেশি ছোঁয়াচে না। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর চামড়ার প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ১০ থেকে ১৫ টি স্ক্যাবি পাওয়া যায়। আনুবীক্ষণিক যন্ত্রের মাধ্যমে চামড়ায় সুড়ঙ্গের মতো বা গর্ত দেখা যায়। এই অবস্থায় থাকলে চিকিৎসা করলে তুলনামূলকভাবে কম সময়ের মধ্যে আরোগ্য লাভ করা যায়।

খোলসযুক্ত স্ক্যাবিস (Crusted Scabies)

এই ধরনের স্ক্যাবিসটা ভয়াবহ ছোঁয়াচে ও ঝুঁকিপূর্ণ। এই ধরনের রোগীর চামড়া পরীক্ষা করলে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে লক্ষাধিক স্ক্যাবি পাওয়া যায়। সাধারণত যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, ডায়াবেটিস, এইডস, ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত থাকে। তারা এই ধরনের স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এদের চামড়ার উপরে পুরু আবরণ দেখতে পায়া যায়। এই ধরনের রোগ অত্যাধিক ছোঁয়াচে প্রকৃতির হয়ে থাকে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসা করতে অনেক সময় লাগে ও কষ্টকর। সহজে ভালো হতে চায় না।

লক্ষণ

স্ক্যাবিস রোগের প্রধান লক্ষণগুলো হলো :-

  • অনেক চুলকাতে ইচ্ছে হয়।
  • রাতে চুলকানি বেড়ে যায়।
  • ঘুমাতে সমস্যা হয়।
  • চামড়ার উপর লালচে দাগ দেখা যায়।
  • ত্বকের উপর ফুসকুড়ি দেখা যায়।
  • অনেক সময় ঘা দেখা যায় বেশি চুলকানোর স্থানে।
  • পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এক‌ই রকমের চুলকানি দেখা যায়।
  • শিশুদের অনেক কান্না করে।

আক্রমণের স্থান

সাধারণত শরীরের এইসব স্থানে বেশি আক্রমণ করে থাকে। যথা :-

  • আঙুলের ফাঁকে
  • কবজি
  • চামড়ার ভাঁজে
  • কনুই
  • বগলে
  • নাভি
  • স্তনের নিচে
  • কোমর ও উরু
  • যৌনাঙ্গের চারিদিকে
  • শিশুদের মাথা, মুখ, হাত-পা

স্ক্যাবিস রোগের লক্ষণ

সংক্রমণের উপায়

স্ক্যাবিসের সংক্রমণের প্রধান উপায় সমূহ নিচে দেয়া হলো :-

  • আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্য শরীরে স্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে।
  • এক‌ই বাড়িতে অবস্থানকারি মানুষেরা আক্রান্ত হতে পারে।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির জামা-কাপড়, বিছানা, তোয়ালে, চাদর, গামছা ব্যবহারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
  • হোস্টেল, আশ্রয়কেন্দ্র, কারাগার, শিশুদের স্কুল, কলেজ ইত্যাদির মতো ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে সহজে ছড়িয়ে পড়ে।
  • ট্রেন, বাস, হোটেলে সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না করলে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
  • অন্যান্য জিনিসপত্র যেমন :- খেলনা, আসবাবপত্র, দেয়াল, রেলিং, কার্পেটের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

রোগ নির্ণয়

স্ক্যাবিস রোগ নির্ণয়ের উপায়সমূহ নিচে দেয়া হলো

খালি চোখে

খালি চোখে আঙুলের ফাঁক, কবজি, কোমর, বগলের চামড়ায় ফুসকুরি, লালচে দাগ এবং ত্বকের নিচে সরু সুরঙ্গ দেখে চিহ্নিত করা যায়।

আণুবীক্ষনিক যন্ত্র

আণুবীক্ষনিক যন্ত্রে আক্রান্ত স্থানের নমুনা সংগ্ৰহ করে পরীক্ষা করা হয়। পরজীবি ও ডিম খুঁজে পেলে রোগ নিশ্চিত করা হয়। এটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা।

ডার্মাস্কোপ

এটি এমন এক ধরনের যন্ত্র যার মাধ্যমে ত্বকের নিচে ও উপরে পরজীবির নড়াচড়া দেখা যায়।

প্রতিরোধ

স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়গুলো নিচে দেওয়া হলো :-

ব্যক্তিগত

প্রতিদিন সাবান শ্যাম্পু দিয়ে যত্ন সহকারে গোসল করা। সব সময় পরিষ্কার কাপড় পরা। নিজের তোয়ালে, গামছা, জামা, বিছানার চাদর অন্যের সঙ্গে শেয়ার না করা।

আক্রান্ত ব্যক্তি

আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখা। ঘুমানোর জন্য আলাদা বিছানা দেওয়া। সুস্থ না হ‌ওয়া পর্যন্ত সহবাস করা থেকে দূরে থাকা। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে না যাওয়া।

ব্যবহার্য কাপড়

আক্রান্ত ব্যক্তির  ব্যবহার্য কাপড় গরম পানিতে সময় নিয়ে ধোঁয়া।

একসাথে চিকিৎসা

পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্যরা আক্রান্ত না হলেও চিকিৎসা নেবার সময় সবাই একত্রে চিকিৎসা নেয়া।

সমাগমস্থল

যেখানে বিভিন্ন ধরনের মানুষ জমায়েত হয়। যেমন :- বাজার, সিনেমা হল, মিছিল, মিটিং,পার্ক। এসব জায়গা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা।

পরিষ্কার করার নিয়ম

স্ক্যাবিস সংক্রমণ রোধে জিনিসপত্র পরিষ্কার করার নিয়মগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে সেগুলো দেয়া হল :-

  • আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড় কমপক্ষে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রার গরম পানিতে ধোঁয়া। গরম পানিতে স্ক্যাবিস পরজীবি মারা যায়।
  • কাপড় সঠিকভাবে সময় দিয়ে রোগে শুকানো।
  • ধোঁয়া সম্ভব না হলে কাপড় কমপক্ষে ৭ দিন প্যাকেট করে ফেলে রাখা। কারণ মানুষের চামড়া না পেলে পরজীবি বেশি দিন বাঁচতে পারে না।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির বিছানাপত্র নিয়মিত পরিবর্তন ও পরিষ্কার করা।
  • ঘরের আসবাবপত্র, কার্পেট, সোফা ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার রাখা।

চিকিৎসা

পরজীবিকে মারার চিকিৎসা

স্ক্যাবিসের পরজীবিকে মেরে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের নাম সমূহ নিচে দেওয়া হলো :-

পারমেথ্রিন ৫% ক্রিম

নিয়ম : রাতের বেলা ঘুমানোর পুর্বে থুতনির নিচ থেকে পায়ের তলার উপর পর্যন্ত ভালোভাবে মেখে রেখে দিতে হবে।বিশেষ করে আঙুলের ফাঁকে, নাভিতে, ঘাড়ের পেছনে, যৌনাঙ্গের চারপাশে, কোমরে, বগলে ভালোভাবে লাগাতে হবে। তারপর ৮ থেকে ১২ ঘন্টা রেখে সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।

কতবার : একবার‌ই যথেষ্ট তবে প্রয়োজনে ৭ দিন পর দ্বিতীয় বার মাখতে হবে।

বেনজাইল বেনযোয়েট লোশন ২৫%

নিয়ম : সংবেদনশীল জায়গা চোখ, মুখ, নাক বাদে পুরো শরীরে  ভালোভাবে মাখিয়ে সারারাত রেখে দিতে হবে। তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে।

কতদিন : টানা ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করতে হবে প্রয়োজনে ৭ দিন পর পর ব্যবহার করা যাবে।

আইভারমেকটিন ট্যাবলেট

নিয়ম : ওজন অনুযায়ী খেতে হবে। কেজি প্রতি ২০০ মাইক্রোগ্রাম একবার করে খেতে হবে।

কতবার : দুইবার। প্রথম বার খাবার ৭ দিন পর দ্বিতীয় বার খেতে হবে।

সালফার মলম

নিয়ম : সারা শরীরে মাখিয়ে সারারাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।

কতবার : পর পর ৩ দিন ব্যবহার করতে হবে।

ক্রোটামিটন মলম ১০%

নিয়ম : দিনে ১ থেকে ২ বার ব্যবহার করতে হবে।

এলার্জির চিকিৎসা

স্ক্যাবিসে চুলকানি বা এলার্জির চিকিৎসা সমূহ নিচে দেয়া হলো :-

এন্টিহিস্টামিন

চুলকানি কমিয়ে রাতে ঘুমাতে সাহায্য করে।

উদাহরণ :- সেটিরিজিন, লোরাটেডিন

স্টেরয়েড

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। ত্বকের লালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করে।

উদাহরণ :- হাইড্রোকর্টিসন ১% ক্রিম

অন্যান্য চিকিৎসা

আরো কিছু ঘরোয়া উপায়ে কিছুটা উপসর্গ কমানো যায়। যথা :-

ঠান্ডা পানি

ঠান্ডা পানিতে ধুলে বা বরফ দিলে চুলকানি কমে যায়।

আদ্রতা রক্ষা

চামড়ায় নিয়মিত ভেসলিন দেওয়া। চামড়া শুষ্ক থাকলে টান থাকে ব্যথা হয়ে যায়।

কারা বেশি ঝুঁকিতে

  • শিশুরা কারণ তাদের ত্বক অনেক নরম হয়ে থাকে।
  • বয়স্করা কারণ তাদের ত্বক পাতলা হয়ে থাকে।
  • যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।
  • এইচ আই ভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা
  • ক্যান্সার আক্রান্তরা
  • গর্ভবতী নারীরা
  • যৌনকর্মীরা
  • ঘনবসতিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীরা

বাজার

ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ

  • আশ্রয়কেন্দ্র
  • হোস্টেল
  • সিনেমা হল
  • কারাগার
  • অনাথ আশ্রম
  • স্কুল/ কলেজ
  • খেলার মাঠ
  • বিনোদন কেন্দ্র
  • বাজার

কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

নিম্নে দেওয়া হলো

  • ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চুলকানি চললে।
  • টানা কয়েকদিন রাতে চুলকানি হলে।
  • আঙুলের ফাঁক, কবজি, কোমর, যৌনাঙ্গ বা বগলে ফুসকুড়ি দেখা গেলে।
  • ত্বকে লালচে দাগ দেখা গেলে।
  • পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এক‌ই ধরনের চুলকানি দেখা গেলে।
  • ত্বকে ঘা বা ফোড়া দেখা গেলে।
  • ত্বকের উপরিভাগে পুঁজ দেখা গেলে।
  • ঘরোয়া চিকিৎসাতে চুলকানি ভালো না হলে।

জটিলতা

স্ক্যাবিসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে তখন জটিলতা দেখা দেয় যখন দীর্ঘ দিন ধরে আক্রান্ত থাকে। চিকিৎসা তে কাজ হয় না তখন। নিচে তেমন কিছু জটিলতা দেয়া হলো :-

  • ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ
  • সেলুলাইটিস
  • দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি
  • কিডনির সমস্যা
  • পারিবারিক ভাঙন
  • অনিদ্রা
  • মানসিক চাপ
  • সামাজিক হীনমন্যতা

চলমান ভুল চিন্তাধারা

আমাদের সমাজে স্ক্যাবিশ নিয়ে কিছু ভুল চিন্তাধারা চলমান রয়েছে। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। যেমন :-

  • স্ক্যাবিস গরীব অভাবী মানুষদের রোগ
  • স্ক্যাবিশ লজ্জাজনক।
  • আক্রান্ত ব্যক্তি ঘৃণার পাত্র।
  • শুধুমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা নিলেই তলবে।
  • পরিস্কার পরিছন্ন থাকলে এই রোগ হবে না।
  • শুধুমাত্র এলার্জির লক্ষণ চলে গেলেই রোগ ভালো হয়ে যায়।
  • স্ক্যাবিস একা একাই ভালো হয়ে যায় ওষুধ লাগে না।

পরিবারে একজন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে কি করণীয়?

  • বাহ্যিক লক্ষণ না থাকলেও পরিবারের বাকি সদস্যদের পরীক্ষা করা।
  • আক্রান্ত রোগীর ব্যবহার্য জিনিসপত্র আলাদা করে দেওয়া।
  • নিয়মিত গোসল করা।
  • সারা বাড়ি পরিষ্কার করা।
  • আক্রান্ত রোগীর সাথে মেলামেশা না করা।
  • আক্রান্ত রোগীর সাথে শারীরিক সম্পর্কে না জড়ানো।
  • পরিবারের সবার এক‌ই সময়ে এক‌ই সাথে চিকিৎসা নে‌ওয়া।

উপসংহার

সব চুলকানি ও ফুসকুড়িকে এলার্জি বলে এক কাতারে রেখে অবহেলা করা উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক ওষুধ ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মাধ্যমে স্ক্যাবিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url